
আলোকিত সকাল ডেস্ক
অনেক সময় ফাঁকি দেওয়ার ফাঁদ রেখেই ঋণপত্র তৈরি করা হয়। যেটা দেখে মনে হয় এই স্থানে বিনিয়োগ করলে প্রচুর লাভ হবে। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেওয়ার সাথে সাথে ঋণটি পরিণত হয় খেলাপিতে। এসব ফাঁদ থেকে বেচে থাকতে আভ্যন্তরিন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে যাচায় বাছাই করে ঋণ বিরণের পরামর্শ দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম।
আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের “ব্যাংক ও আথিক প্রতিষ্ঠানের তথ্য সমৃদ্ধ গবেষণা গ্রন্থ ব্যাংকিং অ্যালমানাক ২০১৭” এর মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে এ সব কথা বলেন তিনি।
এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাত সমস্যার মধ্যে চলছে। প্রকৃত তথ্যের অভাবে অপাত্রে ঋণ চলে যাচ্ছে। যারা ঋণ পাওয়ার যোগ্য নন তারাই ঋণ পাচ্ছে। এতে করে বাড়ছে ঋণ খেলাপি। যাদের আমানত নিয়ে ব্যাংক ব্যবসা করে তারা সহজে ঋণ পায়না। কিন্তু অন্যান্য মাধ্যমে যাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করা হয় সেগুলোই খেলাপিতে পরিণত হয়। এগুলোই এখন ব্যাংক খাতের মূল সমস্যা সমস্যা হয়ে দারিয়েছে।
মির্জা আজিজ আরও বলেন, ঋণ খেলাপির বিবরণীতে যেসব তথ্য প্রকাশ করা হয় তাতে পুন:তফসিল ও রাইট অফ করা ঋণের তথ্য দেয়া হয় না। যার ফলে প্রকৃত ঋণ খেলাপির তথ্য প্রকাশ হচ্ছে না। এগুলো যোগ করলে নন পারফেরমিং লোন আরও বাড়বে। কিন্তু বিশ্বের অন্যান্য দেশে সবগুলোসহ এক সাথে প্রকাশ করা হয়। তাই খেলাপি ঋণ কমাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে গবেষণা ধর্মী এই গ্রন্থ সহযোগিতা করবে।
একই অনুষ্ঠানে তত্ত্ববধায়ক সরকারের আরএক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, খেলাপি ঋণ, তারল্য সংকট, ঋণের উচ্চ সুদহার ও পরিচালন মুনাফা এ চার সমস্যায় ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যাংক খাতে। বর্তমানে এই চারটি সমস্যাই সবচেয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক জামাল উদ্দিন, এ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এর চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, সাবেক ডেপুটি গভর্নর নজরুল হুদা, এবিবির সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, সাপ্তাহিক শিক্ষা বিচিত্রার সম্পাদক আবদার রহমান ও নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের ব্যাংকিং খাতের ৭০ শতাংশ ঋণ দীর্ঘ মেয়াদি। কিন্ত বেশিরভাগ আমানত স্বল্প মেয়াদি। এ চক্কর থেকে বের হতে না পারলে এ খাতকে স্থিতিশীল করা কঠিন। কারণ আমাদের বিকল্প শক্তিশালী কোনো বন্ড মার্কেট নেই।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডাটা এক সঙ্গে পাওয়া যাবে এই বইটিতে। বৈদেশিক বাণিজ্যি, দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ ও ব্যাংকের অবস্থা জানতে এ গ্রন্থটি সহায়ক করবে। তবে গ্রন্থটি গবেষণায় কার্যকর করতে হালনাগাদ তথ্য দিয়ে প্রকাশের দাবি জানান অনেকে।
আস/এসআইসু