
আলোকিত সকাল ডেস্ক
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগবে এমন কথা শোনা জাতি হিসেবে আমাদের শুধু দুর্ভাগ্য নয়, লজ্জারও বটে। সমগ্র বিশ্ব যেখানে বহুদূর এগিয়ে গেছে, সেখানে আমরা আজও পশ্চাৎ–মুখী। এ কথা ভাবতে বড্ড কষ্ট হয়। আমি আমার কর্মক্ষেত্রে প্রায় ১০০ সেতু তৈরির কাজে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কোথাও মানুষের মাথা লাগার কথা শুনিনি। কিন্তু পদ্মা সেতু তৈরিতে দেশব্যাপী এমন গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্য কি জানতে চান তিনি।
সম্প্রতি দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টকশো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ২১ শতকে এসে আমাদের রূপকথার গল্প শুনতে হয়! পদ্মা সেতু তৈরিতে যদি মানুষের মাথা লাগে, তাহলে জাতি হিসেবে আমরা যাব কোথায়? আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি, জাতি হিসেবে আমরা কতটা পিছিয়ে। পৃথিবী বহু এগিয়েছে, আমরা এখনও কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে আছি। আমি আমর কর্মজ্ঞানে বলতে পারি, সেতু তৈরিতে রড, সিমেন্ট ও বালির প্রয়োজন হয়, কখনও মাথার প্রয়োজন হয়েছে বলে শুনিনি। কারা এসব কথা ছড়াচ্ছে? কী তাদের উদ্দেশ্য? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে গুজবকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা হোক। তবেই এসব গুজবকারীরা মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকবে। নয়ত এমন অপপ্রচার করেই যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর গুজবকারীরা বুঝতেই পাচ্ছে না তারা কত বড় ধরনের অপরাধ তারা করে যাচ্ছে। একটা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলা কারও উচিত নয়। পদ্মা সেতু তৈরি হওয়া আমাদের জন্য গর্বের, যা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে তৈরি হচ্ছে। এটা নিয়ে গুজব ছড়িয়ে আমরা রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করছি। পদ্মা সেতুর ৮১ ভাগ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। যা সাংবাদিক বন্ধুরা প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমে প্রচার করে যাচ্ছেন। আমি আশাবাদী যথা সময়েই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হবে।
একই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিকুল আলম চৌধুরী পদ্মা সেতুর গুজবকারীদের বিষয়ে বলেন, গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পেরেছি চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার অধীনে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ হেলাল (মেম্বর) ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগবে। তার এই বক্তব্যকে হালকাভাবে নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেননা তিনি ছোট মানুষ নন, যে আবেগের বশবর্তী হয়ে যা খুশি লিখে দিলাম। সে একজন জনপ্রতিনিধি, তার রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। জানি না কি উদ্দেশ্যে তিনি এমন স্ট্যাটাস দিয়েছেন, তা জানা উচিত এবং অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করে সঠিক তথ্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ দেশ আমাদের সকলের এমন কোন কথা বলা সমীচীন নয় যা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তিকে সংকটে ফেলে দেয়। আর আমি জানি না কি তার উদ্দেশ্য? তবে তাকে গ্রেফতার করা হলে সঠিক কারণ জানা যাবে বলেও জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই শিক্ষক।
আস/এসআইসু