
আলোকিত সকাল ডেস্ক
চলতি বছরের প্রথম ছয় মাস পার করল ব্যাংকগুলো। এরই মধ্যে অর্ধবার্ষিক পরিচালন মুনাফার প্রাথমিক হিসাবও করেছে অধিকাংশ ব্যাংক। এতে দেখা গেছে, প্রথমার্ধে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অধিকাংশই ভালো পরিচালন মুনাফা করেছে। তবে খেলাপি ঋণের চাপ ও ৯ শতাংশ সুদ কার্যকর করতে গিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে গেছে।
অগ্রণী ও বেসিক ব্যাংকের এক শ কোটি টাকার মতো মুনাফা কমেছে বলে জানা গেছে। জনতা ব্যাংকের মুনাফাও কমবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুছ ছালাম আজাদ।
বরাবরের মতো সবচেয়ে বেশি এক হাজার ২২৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছে ইসলামী ব্যাংক। গত বছরের জুনে ব্যাংকটির মুনাফা ছিল ১০২১ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে পূবালী ব্যাংক, আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫৪০ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫১০ কোটি টাকা মুনাফা করেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৪১৮ কোটি টাকা। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে শীর্ষ মুনাফা অর্জনকারী ব্যাংকগুলো হচ্ছে সাউথইস্ট ব্যাংক ৫০৫ কোটি টাকা, ব্যাংক এশিয়া ৪৭৫ কোটি, আল-আরাফাহ্ ৪০৫ কোটি, দি সিটি ব্যাংক ৩৭০ কোটি, এনসিসি ৩৬২ কোটি, মার্কেন্টাইল ৩৩১ কোটি, এক্সিম ৩৩০ কোটি, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ৩২০ কোটি ও প্রিমিয়ার ব্যাংক ৩০০ কোটি টাকা।
২০১৭ সালের জুন থেকেই ব্যাংকগুলো আগ্রাসী ঋণ বিতরণ শুরু করে। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এসে ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সর্বোচ্চ সীমা লঙ্ঘন করায় নতুন করে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ঋণের চাহিদা থাকলেও আমানত সংগ্রহ বাড়াতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে ঋণ বিতরণ করার মতো অর্থ নেই অধিকাংশ ব্যাংকের কাছে। এর মধ্যে খেলাপির সংকট তীব্র হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ তিন মাসেই খেলাপি ঋণ ১৭ হাজার কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। জুন পর্যন্ত হিসাবেও খেলাপি ঋণ বাড়বে বলে জানা গেছে। পরিচালন মুনাফার সিংহভাগ খেয়ে ফেলবে পাহাড়সম এই খেলাপি ঋণ।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধিনিষেধের কারণে অনিরীক্ষিত পরিচালন মুনাফা প্রকাশ করতে পারে না ব্যাংকগুলো। তবে ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, অনেক ব্যাংকই এই ছয় মাসে ভালো মুনাফা করেছে। তবে এই মুনাফাই ব্যাংকের প্রকৃত মুনাফা নয়। পরিচালন মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) এবং করপোরেট কর পরিশোধের পর যে অংশটুকু থাকে সেটাই প্রকৃত মুনাফা। বিএসইসির নিয়মানুসারে ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফার তথ্য প্রকাশ করতে পারে না।
গত বছরের ডিসেম্বরে ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফা ছিল ২৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। তবে খেলাপি ঋণের কারণে প্রকৃত মুনাফা হয় মাত্র চার হাজার ৪০ কোটি টাকা।
সাধারণত ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ রেখে এই হিসাব-নিকাশ করে ব্যাংকগুলো। গতকাল সোমবার ব্যাংক হলিডে উপলক্ষে ব্যাংকের সার্বিক লেনদেন বন্ধ ছিল। কর্মকর্তারা হিসাব-নিকাশ সম্পন্ন করেছেন।
আস/এসআইসু